বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
বাউফলে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় গরু জবাই ও গোশত বিতরণ বেগম জিয়ার সুস্থতার জন্য জাগুয়া ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া মুনাজাত মুফতি রেজাউল করিম বলেন, গত ৫৩ বছরে আমরা অনেক দল দেখেছি বেগম জিয়ার জন্য যুবদল বরিশাল জেলা উত্তরের দোয়া মুনাজাত বেগম জিয়ার সুস্থতার জন্য বরিশাল লৌহ শ্রমিক ইউনিয়নের দোয়া মুনাজাত আট দলের সমাবেশে চমক দেখালেন হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের দাঁড়িপাল্লা সমর্থকরা স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ হবে ২ ডিসেম্বর: মাঠ পরিদর্শনে আট দলের নেতৃবৃন্দ বাকেরগঞ্জে মাঠ কাপাচ্ছে জামায়াত ও বিএনপি, বরিশালে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবায়দুল হক চাঁন এর উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত বাউফলে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মচারীদের আলোচনা সভা মনোনয়ন বঞ্চিতদের অপপ্রচারের প্রতিবাদে দুমকি উপজেলা বিএনপি নেতাদের সংবাদ সম্মেলন কলাপাড়ায় ব্যবসায়ীদের সাথে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং আমন্ত্রণ পত্র বিতরণ বেগম জিয়ার সুস্থতার জন্য দোয়ার আয়োজন বরিশালে স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম : উন্নত ব্যবস্থায় বেড়েছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ভূমি সেবা সহজীকরনে সাফল্য। কলাপাড়ায় চান্দিনাভিটি নবায়নে একদিনে ৬ লাখ টাকা আদায়
দাম বেড়েছে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের

দাম বেড়েছে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের

Sharing is caring!

লাগাতার কয়েক বছর কমার পর গেল অর্থবছরে বেড়েছে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের দাম। এ খাতের রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়েছে গেল গত অর্থবছরে। বাংলাদেশে বিদেশি ক্রেতাদের উচ্চমূল্যের পোশাকের ক্রমবর্ধমান চাহিদা আর চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের ডামাডোলে প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদার করার তাগিদ উদ্যোক্তাদের। আর অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানোর পাশাপাশি ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে উদ্যোক্তাদের।

বিজিএমইএর এক পরিসংখ্যান মতে, গেল অর্থবছরে ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল দেশের তৈরি পোশাক খাতে। এতে খাতটির রপ্তানি আয় তিন হাজার ৪১৩ কোটি ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি। একই সময়ে দাম পড়তির চক্র থেকে বেরিয়ে এসেছে এই খাত। রপ্তানির পরিমাণ ও আয়ের হিসাবে প্রতি ইউনিট পোশাকের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।

অন্যদিকে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে) মার্কিন বাজারে এ খাতের আয় প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ, যা দেশটিতে পোশাক রপ্তানিকারকদের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে ইউরোপের বাজারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশের কাছাকাছি, কানাডায় ২৪ শতাংশের বেশি, অপ্রচলিত বাজারে প্রায় ২৪ শতাংশ। এর মধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ।

তৈরি পোশাক রপ্তানির এমন অর্জনে এ খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর বিশ্লেষণ, উচ্চমূল্যের পোশাক তৈরিতে সক্ষমতা বেড়েছে উদ্যোক্তাদের। সেই সঙ্গে চলমান চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তবে এই ধারা ধরে রাখতে আমলা ও উদ্যোক্তাদের সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। সংগঠনটির সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, ‘কিছু ওয়ার্কিং গ্রুপ খুব দ্রুত করতে হবে। সব জায়গাতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজারসক্ষমতা বাড়াতে সময় এসেছে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানোর। অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় টাকা কিছুটা অধিমূল্যায়িত রয়েছে। এটা কমাতে হবে। চলমান কারখানা সংস্কারের সুফল ঘরে তুলতে উদ্যোক্তাদের বাজার চাহিদা বিশ্লেষণে আরও মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, ‘রপ্তানি বাড়ার পেছনে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের একটা প্রভাব পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপের বাজারে বেড়েছে রপ্তানি। কোনো কারণে সমস্যায় পরলে তারা বাংলাদেশকে সেকেন্ড অপশন রাখতে চাইছে।’

‘যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের রপ্তানি কম ছিল। এর জন্য আমরা সেখানে মার্কেটিং করেছি, এটাও কিন্তু বাড়ার একটা কারণ।’

তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যহত রাখতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে ৫ থেকে ৭ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিজিএমইএর এ জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে স্পিনিং মিল স্থাপনের জন্য বিজিএমইএ কাজ করছে জানিয়ে ফয়সাল সামাদ বলেন, ‘আমরা সেখানে স্পিনিং মিল স্থাপনের জন্য আগ্রহী। সেখানে স্থাপতি স্পিনিং মিলে উৎপাদিত সুতা বাংলাদেশে আমদানি হবে। সেই সুতা দিয়ে তৈরি হবে পোশাক, তা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করলে যেন বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায় তার চেষ্টা করছে বিজিএমইএ।’

বাংলাদেশে ক্রমশই গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যা বাড়ছে এবং একই সঙ্গে বাড়ছে কমপ্লায়েন্স কারখানা। বাংলাদেশের পোশাক কারখানা সংস্কারের কথা বিশ্বের সবারই জানা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাকের দামের তুলনায় ইউরোপের বাজারে দাম কম। এর জন্য কূটনীতির জোর দিতে হবে বলে অভিমত এ খাতের ব্যবসায়ীদের।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘গত কয়েক বছর টেকনোলোজি ইমপ্রুভ হয়েছে। বিল্ডিং সেফটিতে কাজ হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশি পণ্যের ডিমান্ডও বেড়েছে। দ্রুত পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার সক্ষমতা বাড়েছে। লিড টাইম কমে এসেছে। শ্রমিকদের দক্ষতার উন্নয়ন হয়েছে। এটা প্রবৃদ্ধি বাড়ার একটা কারণ।’

‘আরেকটা হলো পোশাকশিল্পের ব্যান্ডিংয়ে সরকার এবং উৎপাদকরা কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। আমাদের পণ্যের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের ডেনিম পণ্যর মান ইউরোপের বাজারে এক নম্বর।’

এ ছাড়া চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ কিছুটা প্রভাব ফেলেছে বলেও মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ। এ ছাড়া চীন সম্প্রতি পোশাকশিল্প থেকে অন্য শিল্পে ঝুঁকছে এটাও আরেকটা কারণ।

এ অর্থনীতিবিদের মতে, প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বন্দরে সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়াতে হবে। পণ্য ওঠানো নামানোয় ক্রেনের সুযোগ বাড়াতে হবে। আর সব মিলিয়ে খেয়াল রাখতে হবে বিশ্বে পোশাকশিল্পের ইমেজ যেন নষ্ট না হয়।

রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর দেশের দেশের পোশাক কারখানার ব্যাপক সংস্কার হয়েছে আর সেটি কারখানাগুলো সংস্কারে মালিকদের ওপর প্রভাব ফেলেছে মন্তব্য করে নাজনীন বলেন, ‘আমাদের দেশে গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যা বেড়েছে। এটাও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কাজে দিয়েছে।’

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD